Sunday, February 2, 2020

ANURAG/DIBAKAR : rat race of intellectual indies

এটা অনেক মাস ধরে মাথায় ঘুরছিল। লং আ্যাওয়েটেড টাইপের আর কি। টেরি গিলিয়াম ১৫ ২০ বছর ধরে যেমন ডন কুইক্সোটের গল্প নিয়ে একটা বই বানানোর চেষ্টা করছেন, হচ্ছেই না। বা ওয়াচমেন নিয়ে যে বইটা হয়েছিল ২০০৭ এ, সেটাও তো প্রচুর হাত ঘুরে তারপরে জ্যাক স্নাইডারের কাছে এসেছে। হামবড়াই ছেড়ে কাজের কথায় আসি। প্রথমেই বলে রাখি আরও কোটি কোটি লোকের মত, আমি এই দুজনের বিশাল বড়ো ফ্যান। না, সত্যি। দুজনেই সমাজকে দারুন দারুন সব বার্তা ও ব্যাখ্যা দেন বটে, কিন্তু একটু ভালো করে দেখলেই বোঝা যাবে কি অসাধারণ ক্র্যাফট এই দুজনের। কিন্তু এটা নিয়ে সবাই লিখেছেন [তার মানে এই না যে আমি আরেকটা লিখতে পারি না, ইচ্ছে আছে ওনাদের ফিল্মোগ্রাফি নিয়ে একটা ব্রেকডাউন বানানোর কখনও]। মোইফাইটক্লাব বলে একটা ব্লগ আছে। তাদের তো ওনাদের চেটেই এক সময় দিন গুজরান হত। কিন্তু এই লেখাটা সেই নিয়ে নয়। এমনকি এটা ওনাদের ড্রব্যাক খুঁজে বার করারও না। দুজ দুজনের কি রকম পোদ চাটেন, এই নিয়ে একটু মজা করার ইচ্ছে অনেক দিনের, ব্যাস

পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় একবার একটা সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন যে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে নাকি খালি দুটো জিনিস হয়, ব্যাকস্ট্যাবিং আর ব্যাকস্ক্র্যাচিং। অবশ্য এটা সমস্ত ইন্ডাস্ট্রিতেই সেম :P। দ্বিতীয় ব্যাপারটার অসাধারণ উদাঃ হল, আমাদের মাননীয় দুই রোস্টী, অনুরাগ ও দিবাকর অবশ্য খুব লং রানে দেখলে বোঝা যাবে, অনুরাগ কাশ্যপের সাথে এই রকম পেয়ার আগেও দেখা গেছে। একসময় বিশাল ভরদ্বাজকে একাসনে দেখা হত ওনার সাথে। যদিও এটা ভুল, কিন্তু সেটা বলার স্কোপ এই ব্লগটায় নেই। তারপরে ইমতিয়াজ আলি, অনুরাগ নিজেই হাজার হাজার ইন্টারভিউতে বলতেন এনার কথা, যে এক সাথে কেমন করে বোম্বাই এসেছিলেন, সিরিয়াল লিখছিলেন, ইত্যাদি ইত্যাদি। যেন কুয়েন্টিন ট্যারান্টিনো আর রবার্ট রড্রিগেজ [হা হা]. একটা টাইমে তিগমাংশু ধুলিয়া, সুধীর মিশ্র। কিন্তু সব চেয়ে লম্বা যে সম্পর্কটা টিঁকলো, সেটা হল দিবাকর ব্যানার্জির সাথে। দুজনেই প্রথম দিকে খুব রাগ ও ইন্ডি ফিল্মমেকারদের কষ্ট নিয়ে কেত্তন করতেন, আর এখন জাস্ট সিউডো-গে-পনা চোদান

প্রথমে আসি, কাস্টিংএ। এই যে লাস্ট দশকে খুব একে অপরের প্রাইম লীডকে নিয়ে সিনেমা বানাচ্ছিলেন বোম্বাইয়ের ডিরেক্টরেরা, এটার ফ্ল্যাগশিপ পুঁতেছিলেন এই দুই ভদ্রলোক। আর নোংরাও করেছেন এই দুজনেই। একটু উপর থেকে দেখলে বোঝা যাবে, পারেশ রাওয়াল ওনাদের ফিল্মে সিঙ্ক খান না। তাও নো স্মোকিংএ ওনার কাজ দেখে ওয়ে লাকি লাকি ওয়ে-তে উনি তিন বাবার রোল পেলেন। দেওল পরিবারের সবচেয়ে কম খ্যাত ও সবচেয়ে বেশি আলোচিত অ্যাক্টরকে নিয়ে দুজনেই একে সময়ে সিনেমা তুললেন। দুটোই দিল্লি বেসড। সাংহাইতে কল্কিকে কাস্ট করা হল। সিনেমা দেখে হল থেকে বেরিয়ে আসার পরে অনুরাগ কাশ্যাপ বললেন "অসাধারণ ছবি"। দিবাকর আবার আরো বেশি মেটা, উনি বললেন "অনুরাগ এটা বলছে কারণ ওঁর বৌ আছে"। গ্যাংস অফ ওয়াসেপুরের কতগুলো প্রেস মিটে তো দিবাকর নিজেই গামছা পরে [literally] প্রোমোট করেছেন। গ্যাংসের বড়ো দুজন কাস্ট, রিচা চাড্ডা আর রাজকুমার রাও, দিবাকরের সিনেমার আবিষ্কার বলা যায়। অবশ্য এই সবের এপিকনেস এক দিকেই যাওয়ার ছিল, যাকে সাহেবরা অ্যান্থোলজি বলেন। যদিও রাম গোপাল ভার্মা, সঞ্জয় গুপ্তা, এবং আরও অনেকে আগেই এটা করে গেছেন [দশ কাহানিয়া, মুম্বাই কাটিং], তবু ভারতীয় ইতিহাসে বোম্বে টকিজের জন্যে আশি দুয়ার অনেক ধন্যবাদ প্রাপ্য। সেখানে আবার পটলবাবুর গল্পে নওয়াজুদ্দিন সিদ্দিকীকে দিয়ে অসাধারণ কাজ করানো হয়েছে, যিনি কিনা অনুরাগ না থাকলে আজকে স্টার হতে পারতেন না। পরে অবশ্য, লেবু কচলানোর মতই, সবাই এক এক করে নেটফ্লিক্সে হেগেছেন

তারপরে, ফিল্মের ট্রিটমেন্ট। এটা অবশ্য বলার অপেক্ষা রাখে না, দুজনেই অতিমাত্রায় সোশিওপলিটিক্যাল এলিমেন্ট প্রত্যেকটা বইএ রাখেন। খানিকটা ধর্মও বটে, দুজনেই সনাতন হিন্দুত্বের গাঁড় মেরেছেন প্রচন্ড। দিবাকর ব্যানার্জী একজন অসাধারণ ক্যামেরাম্যান আনলেন - নিকোস আন্দ্রিতসাকিস - যিনি তুললেন আগলি, যেটা কিনা খুব সুন্দর একটা ফিল্ম হয়েও গ্যাংসের তলাতেই পড়ে গেল। এমটিভির সাউন্ড ট্রিপিং-খ্যাত স্নেহা খানওয়ালকারের কাজ লাভ সেক্স ওউর ধোঁকাতে দেখে অনুরাগ তাকে পাঠালেন ক্যারিবিয়ানের দ্বীপপুঞ্জে ওয়াসেপুরের ট্র্যাক বানানোর জন্যে। প্রসঙ্গত বলে রাখি, অনুরাগ যদি অসাধারণ অ্যাক্টর আর রাইটার আবিষ্কারক হোন, তবে দিবাকরকে ক্রেডিট দিতে হয় দারুণ দারুণ কিছু ক্রু খুজে বের করার জন্যে। তারপরে, যে দুটো সিনেমা নিয়ে না বললেই নয় - ডিটেক্টিভ ব্যোমকেশ বক্সী আর বোম্বে ভেলভেট। এই সময়ে দুজনেই দেশের বৃহত্তম দুই স্টুডিওর মালিকের সাথে কাজ করেছেন। আর দুটো সিনেমাতেই একগাদা টাকা পেয়ে দুজনে কি করলেন, না দুটো মেট্রোর রেট্রো লুক বানালেন আর দুই সুপারস্টারকে হিরো হিসেবে কাস্ট করে তাদের গোঁফ গজিয়ে দিলেন [literally]। তিতলির একটা প্রোমো ভিডিওতে দিবাকর দাঁত কেলিয়ে বলেছেন যে অনুরাগ প্রোডিউসার হওয়ার পরে তার নাকি ইনফেরিওরিটি কমপ্লেক্স হত, তাই জন্যে তিনিও এবার ফিল্ডে নামলেন। বোম্বে টকিজ তো ২০১২-এর পরে। তার আগেও প্রচুর সাক্ষাৎকারে এদের দুজন কে একসাথে পাওয়া যেত। একটাতে এনারা দুজন ছিলেন আনন্দ গান্ধী [শিপ অফ থিসিয়াস] আর হাবিব ফয়সল [ইশকজাদে] দের সাথে। তাতে বারবার আনন্দ তার মিশরীয় নায়িকার কথা বলছিলেন বলে সবাই শো অফ করতে শুরু করেন। দিবাকর বললেন আমার ডিওপি গ্রীক, অনুরাগ বললেন আমার বৌ ফরাসী, আর হাবিব বললেন আমার মা পাঠান। কে বলে আর্ট ফিল্মমেকার রা সুপারফিশিয়াল হয় না?!

এই যেগুলো লেখা হল, মোটামুটি স্মৃতি থেকে। এর মধ্যে কয়েকটা খবর শোনা, কয়েকটার লিঙ্ক/ভিডিও আর ইন্টারনেটে নেই। সেই সবের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে খিল্লি উড়ান, আপত্তি নেই। কিন্তু এই যে ১০ বছর ধরে ওনাদের যে মিউচুয়াল তারিফ চলল, সেটার শুরু কিন্তু একটা শক্ত জায়গা থেকে। আগে কি হচ্ছিল, আদিত্য চোপড়া করণ জোহরকে কাস্ট করছেন, করণ কখনো মহেশ ভট্টর মেয়েকে ব্রেক দিচ্ছেন। তার কাউন্টারকালচারেই, ছোটো ছোটো [তখনো পর্যন্ত] শিল্পীরা এক সাথে দল বাঁধলেন। কিন্তু প্রবণতাটা কালে কালে সেই একই জায়গায় ঠেকলো। অবশ্য ওনাদের সেল্ফ জাজমেন্ট কিছুটা রয়েছে বলে, এই সব কথা স্বীকারও করেছেন। দিবাকর নিজেই বলেন, অনুরাগ আর ওঁনার মত বোম্বে জেনারেশনের ডিরেক্টরদের যে পরিমাণ কষ্ট ও কার্পণ্য করতে হয়েছে, সেগুলো তাঁরা করেছেন বলেই পোস্ট-মিলেনিয়াল ব্যাচকে সেটা আর ফেস করতে হয় না। অনুরাগ নাকি ভারতীয় রাজনীতিকে দিবাকরের মত অতো পারফেক্টলি কোনদিন দেখাতে পারবেন না। এই চলছে, এই চলবে। একদিক থেকে দেখতে গেলে, এই সব না হলে ব্লগারদের তো জুম টিভিতে কপিরাইটার হিসেবে জয়েন করতে হত। দেখি, ভবিষ্যতে 'র‍্যাডিক্যাল' ইন্টারনেট সেলেবদের উপরও এরকম একটা লেখা যায় কিনা

0 comments:

Post a Comment