Sunday, February 2, 2020

PINK : flaw of the feminist wave

২০১২ তে মনে আছে একটা ওয়েভ মতো এসেছিল?! সবাই বলাবলি করছিলো যে পৃথিবী সত্যি সত্যি না ধ্বংস হয়ে যায়, সেই ভয়ে লোকজন তাদের সেরা কাজটা করে রাখছেন। তেমনি, ২০১৫ ২০১৭ হল গিয়ে একটা সময় যখন একগাদা ফেমিনিস্ট মুভি রিলিজ করল। ওয়ান্ডার ওম্যান তো বটেই, যেটা কিনা নাকি খুব ইন্সপায়ারিং, প্রচুর স্ট্রং মহিলাদের নিয়ে লেখা। তারপরে আবার প্যাটি জেনকিন্স নিজে বানাচ্ছেন। এই ট্রেন্ডটা নিয়েও অবশ্য পরে খোঁচাখুঁচি করা যেতে পারে কিন্তু আপাতত পয়েন্টে ফিরছি। পিঙ্ক, অ্যাংরি ইন্ডিয়ান গডেসেস, মাত্র, মম, কাহানি ২, মর্দানি, সিমরন, মেরি কম, লায়ার্স ডাইস, নাম শাবানা, পার্চড। একটু খুঁটিয়ে দেখলেই বোঝা যাবে যে এর মধ্যে কয়েকটা প্রায় কামব্যাক ফিল্ম। আবার কয়েকটা আছে, বলিউড বঞ্চিতদের ক্লাব থেকে। আর কয়েকটা ডাইরেক্টলি কঙ্গনা ম্যাডামের ছবি :D। তবে মোটামুটি যে মোটিফটা পাওয়া যাচ্ছে, সেটা নিশ্চয় খুব ভাল কিন্তু এই ব্লগটা সেই ট্রেন্ড নিয়ে নয়

এইটা লেখার পুরো অনুপ্রেরণা পিঙ্ক থেকে। না না, সিনেমাটা নয়, বইটা দেখার সময় আমার যে রিঅ্যাকশন হয় এটা নিয়ে। টাইম ট্রাভেলের মত, নারী স্বাধীনতার কন্সেপ্টটা সত্যি কথা বলতে আমার মাথায় খুব একটা ঢোকে না। সেই নিয়ে অবশ্য পিতৃতান্ত্রিক সমাজকে এক হাত নেওয়া যায়, কিন্তু আমার নিজেরও বোঝার গলদ আছে। এবং দূরদর্শিতার অভাব। আমি খুব লিবারাল সাজার জন্যে, একাধিক মহিলাদের নিয়ে এই সিনেমাটা দেখতে গেছিলাম। প্রথমে ঠিকঠাক চলছে, একটু আধটু জোক টোক, কিন্তু যেই ইন্টারভাল দিল, আমার বান্ধবীরা যেনো হেব্বি চার্জড হয়ে উঠলো এবং আমাকে পুরো সেকেন্ড হাফে প্রচুর বঞ্চনা ও অশ্লীলতার উদাঃ শুনতে হল। প্রশ্ন হছে, আমার কি চোখ কান বন্ধ করে এগুলোকে ভাল বলা উচিৎ। কয়েকটা সিনেমা যেমন মাত্র, মম আমার খুব ভাল্লেগেছিলো, কিন্তু সেটা তো ক্র্যাফট। এই যে শুনে আসছি, আধুনিক শিল্প কি বলতে চাইছে, তার থেকে বেশি জরুরি কি ভাবে বলছে, তার বেলা?!

সেই ঘুরে ফিরে একই জায়গায় ফিরে আসলুম, আর সেটা হল স্টাইল না সাবস্ট্যান্স। এর সহজতম ব্যাখ্যা হল, কবি কি বলতে চাইছেন। একটা ছবি এঁকে আমি খুব ভারি কিছু সামাজিক বার্তা দিতে পারি, তখন কিন্তু তার রঙের ব্যবহার দেখলে চলবে না। আবার একটা গান কেউ গাইতেই পারেন চমৎকার সুর, রাগ ও শব্দ প্রয়োগ করে - যেটা কিনা আসলে একটা প্রপাগান্ডা। হাজার হাজার এরকম আছে। যেমন প্রথম ১২ রিলের সিনেমা, বার্থ অফ আ নেশন। যাকে ব্রেকথ্রু কিছু ক্যামেরা ও এডিটিং এর জন্যে নির্বাক যুগের সিনেমার একটা বিশাল মাইলস্টোন বলা যায়, সেটা কিন্তু প্রবলভাবে কেকেকে-কে সাপোর্ট করে তোলা। লিংকন-হত্যাকারী বুথকে প্রায় একটা রেবেল ও জাতীয় হিরো হিসেবে দেখানো হয়েছে এতে। উল্টোদিকে আমাদের দেশের কমিউনিস্ট মনোভাবাপন্ন ডিরেক্টরদের প্রচুর বই রয়েছে যেখানে সাবল্টার্নদের অধিকার দের নিয়ে হাই ফাই বাতেলা আছে, কিন্তু সিনেমা দেখার মজা নেই। অতএব, বুঝতে হবে যে জিনিসটা বানানো হয়েছে কি দেখার জন্যে

উল্টোদিকে এটাও বলা যায়, কবি কবে কী বলে গেছেন, সেই নিয়ে পড়ে থাকলে হবে না। আর কে নারায়ণ তার মহাভারতের অনুবাদের মুখবন্ধে বলেছেন, এই কাব্য বারে বারে রিইন্টারপ্রেট হয়ে এসেছে, এবং আরো হবে। সিটিজেন কেন প্রায় একটা এক্সপেরিমেন্টাল ফিল্ম হিসেবে বানানো হয়েছিল [ক্যামেরা আর লাইট দেখলে বুঝবেন কি খাটনি গেছে], আজকাল সেটাকে ফিল্ম মেকিং এর টেক্সটবুক বলা হয়। গুণ্ডাকে মিঠুনের একটা সিরিয়াস সিনেমা বলা যেতে পারে, কিন্তু ওটার কাল্ট ফলোইং হয়েছে কিন্তু ভিলেনদের গ্যাংএর জন্যে। অতএব, হ্যাঁ, অন্যভাবে দেখাই যেতে পারে। তারপরে আবার একটু পড়াশুনোও দরকার, যাকে বড়ো বড়ো অফিসে প্রিরিকুইজিট বলে। কেউ বলতেই পারেন, আর্টের মুখ্য উদ্দেশ্য যদি আমোদই হয়, তাহলে বাবা আত ঝামেলার দরকার কি?! এজরা পাউন্ড [মনে হয়] বলেছেন, "পোয়েট্রি শুড কমিউনিকেট বিফোর ইট ইস আন্ডারস্টুড". এই কথাটা তো বাকি আর্ট ফর্মের ক্ষেত্রেও খাটে নাকি?!

এতক্ষন কনফিউজ করার ও হওয়ার পরে মূল বিষয়ে ফেরা যাক। তাহলে এই যে নয়া নারীবাদী সিনেমা আসছে, সেটা নিয়ে আমরা করবোটা কি?! আমরা মানে পুং-রা। প্রথমত তো সব জিনিস নিয়ে কনক্লুশনে পৌঁছানো যায় না বলে আমি মনে করি। ঐ ঈশপ বা বিষ্ণুশর্মা আড়াই হাজার বছর আগে যা করে গেছেন, সেটাকে সব জায়গায় ফলো করার কোনও দরকার নেই। ছোটগল্পের আইডিয়া তো মোটামুটি এখান থেকেই। যে জীবনের একটা স্লাইস তুলে দেওয়া হল, তার মানে জীবন, বা গল্পও, শেষ হয়ে যায় না। এবং নানা ভাবে ইন্টারপ্রেট করা যেতে পারে। আমার নিজের ওনাদেরকে খুব পছন্দ, তার মানে এই নয় যে ওনাদের ফরম্যাট-ই একমাত্র ফরম্যাট। যদি সত্যিকারের নারীবাদ সাপোর্ট করতে হয়, সিনেমাটাকে সেইভাবেই দেখব যেমন করে একটা মেল-লেড পীসকে দেখা হয়। স্বাধীনতা ও স্বাধিকারের সাথে খিস্তি ও ক্যালানি একই প্যাকেজে আসে। এই লেখাটা আসলে সেই সেকেন্ড প্যারার আঁতেল বান্ধবীদের জন্যে, তারা একটু বুঝলেই ব্লগ সার্থক

0 comments:

Post a Comment