Wednesday, September 27, 2023

Written Reviews back from 2012 : Gangs of Wasseypur [দুটো পার্ট]

 "এরপরে আরেকটা মুভি। এটা ঠিক বরফির আগেই দেখা। মানে সেকেন্ড পার্টটা। ফার্স্ট পার্টটা বাড়ি গিয়ে দেখেছিলাম। তো এতে হাত দেওয়ার মানে একটু তেল সাথে নিতে হবে। ব্রাউজিংএর জায়গা একদম ভরা। প্রথম কথা হল - নতুন কিছু না। গডফাদারের বলি-অনুবাদ বহুবার হয়েছে। দয়াবান, নায়গন, বিরাসত, রাজনীতি। স্টাইল যদি বলা হয় - পুরোনো কোরিয়ান রিভেঞ্জ ফর্মাট। বলিউডে রক্তচরিত্র, হলিউডে কিল বিল - সেম জিনিস। তাহলে ব্যাপারটা কী?! কেন এত হইচই?! দুটো কারণ। এক, অনুরাগ কাশ্যপের এই ফার্স্ট মুভি যেটা তার নিজের জায়গা থেকেই - অলমোস্ট - বানানো। উনি সাউথ ইউপি - আর সিনেমার লোকেশন ঝাড়খন্ড। এর সাথে আছে অনুরাগের প্রসেসসধর্মী স্টোরিটেলিং - যেটা খুব লম্বা করে দেখায়। হ্যাঁ, ব্ল্যাক ফ্রাইডের পরে এই প্রথম। সেই ব্যাটল অফ অ্যালজিয়ার্সের স্টাইল। সাথে নর্থ ইন্ডিয়ার খাঁটি চুতিয়াপন্থী আবহ। আর দুই, যেটা কিনা না বললেই নয়। এর আগে অনুরাগের দা গার্ল ইন দি ইয়েলো বুটস বলে একটা সিনেমা বেরিয়েছিল, তার ট্রেলার কজন দেখেছে হাতে গুণে বলা যায়। তারপরে গুলাল। এটা ছিল পুরোনো, অনেক পুরোনো ডায়লগ-রাইটার/স্ক্রিপ্ট-রাইটার অনুরাগের সিনেমা। বাজারে হিট হওয়ার যথেষ্ট ম্যাট ছিল। শুধু মার্কেটিং হয়নি বলে ঝুলেছিল। মার্কেটিংওয়ালা সিনেমা একবারই হয়েছিল এর আগে - দেব ডি। যেটার বাণিজ্যপন্থা অনুকরণ করে কামিনের মতো যাতা সিনেমাও - বিশাল ভরদ্বাজের হয়েও - বিশাল ওপেনিং পেয়েছিল। অবশ্য তার কিছুটা দায় বর্তায় কাস্টিংএর উপর। তো সেই মার্কেটিংএর বাবার বিয়ে দিয়েছে গাউ (GoW) সিরিজের প্রমোশনে। পুরোনো প্রোমোটিং ভিডিওগুলো এখনও দেখায়, অনুরাগ বোকার মতো ভাট বকছে। অবশ্য টিজার ট্রেলার গুলোও অসাম ছিল। সাথে ছিল গান। এই একটা পয়েন্ট মাঝে মাঝেই বলতে হবে - মিউজিক। অনুরাগের অন্যতম দুর্বলতা হলো ভালো কাস্টিং, সেই করতে গিয়ে এমন একজনকে মিউজিক ডিরেক্টরের চেয়ারে বসিয়েছেন, যে চন্দ্রিলের ভাষায় বলতে হয়, কোটি কুর্নিশ। বিহার ইউপি এমপি থেকে যা পেরেছে - তাই এনে স্নেহা খানওয়ালকার, সাউন্ড ট্রিপিংএ ইন্ডিয়ার যে অঞ্চলটা বাদ গেছিলো - সেই পূর্ব-মধ্য ভারতের সংগীত দিয়ে অসংখ্য পারমুটেশন-কম্বিনেশন করেছে। সবগুলো গানই, সেই বিচারে, অসাম। গুণগতভাবে কিছু গান যা-তা। অনুরাগের কাছ থেকে অনেককিছু শেখার আছে, যার মধ্যে একটা হলো কাস্টিং (হ্যাঁ, আবার বলছি) - কিন্তু সঠিকভাবে। এর আগে নো স্মোকিংএ জনকে যেমন রোল দেওয়া হয়েছিল, দুঃসাহস দেখে হা করে থাকতে হয়। আয়েশা টাকিয়াকে নেওয়াও চাপের, কিন্তু ওই মহিলা আমার প্রিয়তম নায়িকা (বলি), তাই একটু বায়াসড, তাই কিছু বলি না। আর দেখলাম গাউ তে। মনোজ তিওয়ারিরও যে সদ্ব্যবহার করা যায়, তাও এখান থেকেই শেখা। আর হ্যাঁ, অবশ্যই পীযূষ মিশ্র। যদিও ওনার অসাধারণ গান আগে গুলালে শুনেছি। তবুও বলবো, পঞ্চাশ বছর ব্যাপী এই সিনেমায় বড্ডো দরকার ছিল। তবে হ্যাঁ, স্টিরিওটাইপ। আরো ভালো কিছু শোনার আশায় রইলাম। গানের কথা বললেই আরেকজনের কথা চলে আসে - যশপাল শর্মা। একেই বোধহয় বড় অভিনেতা বলে। কী একটা রোল। দুটো সিনেমায় বলতে গেলে তিনটে কি চারটে সিন - তাও কথা না, গান - এই নিয়েই একটা রোল যেটা কিনা ভোলার না। রোলটা এমন একজন লোকের (এমনিতে আর্টিস্ট/সিঙ্গার, কিন্তু এই ধরণের লোক দেখলে লোক-ই বলি লাইফে) যিনি সব অকেশনেই গান গান। মাঝে মাঝে আবার ডুয়েট গলায়। শ্রাদ্ধবাসর, বিয়ে সবকিছুর জন্যেই আলাদা আলাদা হিন্দি গান আছে তার ঝুলিতে। অসাধারণ সূক্ষতার জন্য, ডিটেলিংএর জন্য ধন্যবাদ যদি অনুরাগের প্রাপ্য হয়, তবে অন্তত রোলটিতে হ্যাঁ বলার জন্য যশপালের অনেক অনেক মেহেরবানিয়াঁ। দুটো সিনেমার কথা টানাই বলি। প্রথমে যখন মনোজ বাজপেয়ী তার বাবা জয়দীপ আহলাওয়াতের মৃত্যুর বদলা নেবে বলে অস্থির, তখন মনোজকে মাইকেল আর জায়দীপকে ভিটো কর্লিওনিই লাগে। আস্তে আস্তে বোঝা যায়, গল্প এখনও বাকি। তিগমাংশু ধুলিয়ার অল্প বয়সের রোলটা কে করেছে নাম জানি না, কিন্তু একটা রোলে ঢুকে নিজেকে যে এতটা গ্রুম করা যায়, তা জানতাম না। আর তিগমাংশুর কথা পত্রপত্রিকায় অনেক লিখেছে, সবগুলো ঠিক। এবারেও বলবো অসাধারণ কাস্টিং, কিন্তু তাতে তিগমাংশুর অভিনয় একটুও ম্লান হয়ে যায় না। ওই পাতা চুল, নোংরা মুখ নিয়ে তিগমাংশু হিট। সুপার হিট। আলট্রা হিট। ডিজেল হিট। মনে পড়ে গেলো, পেট্রল পাম্পে দুটো সিন আছে। মনোজের ড্রিম কেরিয়ার শুরু পেট্রল পাম্পে। জীবন শেষও। সেখানে না হলেও, সেই পেট্রল পাম্পেই। সিনেমা রিলিজের আগে পীযূষ মিশ্র একটা ইন্টারভিউতে বলেছিলেন, 'পরিচালক কি ডাকবাক্স নাকি যে শুধু সন্দেশ (message) দেবেন?! শুধু একটা ভালো চলচ্চিত্র হিসেবে দেখতে আসুন'। মেসেজ-ধাবকদের গালে একটা বেশ থাপ্পড়। তবুও আমরা যারা বড় বোদ্ধা তারা তো একটু আঁতলামো করবই। এই যে একটা মানুষের শুরু শেষ কে একই ব্যাকগ্রউন্ডে বানানো - এবং তার উত্তরাধিকারীর উত্থানও একটা চায়ের আড্ডায় আর চা আনার প্রসঙ্গেই মৃত্যু - এগুলো তো একটু ভাবার সময়ের দাবী রাখে। ট্রেলারে 'বিহার কে লালা' গানটা তো রক করেছিল, মনোজের লাস্ট সিনে সেটা যেন আরো মাত্রা দেয়। মানে অন্ততঃ হলে খুব মস্তি হয়েছিল। আরেকটি রোল করেছেন রিচা চাড্ডা। ওনার অসাম মা-কাকিমা টাইপ হাবভাব (উদাঃ হাতে ঝোল চেটে নুন বোঝা) একটুও ক্ষীণ লাগে না। শুধু বৃদ্ধার রোলে মানায়নি বেশি। হুমা কুরেশিকে ব্যাপক লাগে, গার্লফ্রেন্ড এরকমই হতে হয়। জুহি চাওলার পরে খুব একটা বেশি নায়িকাকে এতো ভালো গার্লফ্রেন্ড মানায়নি। অভিনয় তো ভালোই, অসাধারণ হলো ভয়েস ডেলিভারি। হাসিটা কলেজের সেরা সুন্দরীর মতো। তার উপর বইয়ের চয়েস। আশির দশকে হয়তো মেয়েদের প্রিয় বই মাত্রই একটা পাল্প ফিক্শন ছিল। অভিনয়ে পীযূষ মিশ্র আগের মতোই ভালো। বুড়ো হয়ে যেন নির্বাক অভিনয় আরো মন কেড়ে নেয়। আরো দুজনের কথা বলতে হয়, কিন্তু নাম মনে নেই, গুগল করে দেখতে হবে [*]। আপাতত আসি সিনেমার আরেকটি জায়গায় - আবহ। সম্প্রতি _?!_ তে [†] একটা প্রবন্ধ দিয়েছিল - তাতে বলা হয়েছিল বলিউডের নতুন ট্রেন্ড হলো রাস্টি ডিওপি। পান সিং তোমার, ইশাকজাদে, গাউ। কয়েকদিন আগে গেলো দাবাং। ট্রেন্ড কতদিন থাকবে জানি না, কারণ বলিউডে অপ্রতিরোধ্য ট্রায়ো সংগীত-স্টারকাস্ট-সেট এর স্টিরিওটাইপ ভাঙা শিবের বাবার অসাধ্য। ও হ্যাঁ, কদিন পরে আসছে চক্রব্যূহ, প্রকাশ ঝা প্লিজ আর ঝোলাবেন না। কিন্তু ট্রেন্ডটা দুদিনের হলেও বেশ ভালো। ভালো, কারণ নতুন। অনেকে রাউডি রাঠোড়কেও রাস্টি বলছে, কিন্তু আমি খুব একটা শিওর না। তবে একটু চেঞ্জ হওয়া ভালো। তাতে খারাপ ভালো দুটো মালই সমানে ঢোকে ঠিকই, কিন্তু মিউটেশনের চান্স থাকে। এখানে ডিওপি, কে জানি না, অসাধারণ একটা কাজ করেছেন। গ্ল্যামারের বিন্দুমাত্র কোনো সিনে ঢুকতে দেননি। বেশ পুরোনো ডিওপিদের মতো - যাদের ক্যামেরাম্যান বলা হতো :)। এডিটিং নিয়ে বেশি কিছু বলার নেই, কারণ লং শট আছে অনেক। যে জিনিসটা নিয়ে সত্যি বলার, সেটা হলো অ্যাকশন কোরিওগ্রাফি। প্রথমে মনে হবে এত বাস্তব সব কি রিহার্সাল ছাড়া হয়েছে?! অনেকগুলো সিকুয়েন্সের মধ্যে বলতে হবে মনোজের প্রথম স্ট্যাবিং, জয়দীপের ক্যালানো, জীশান রাজকুমারের স্কুটার-বাইক চেজ, পঙ্কজের কাঁঠাল কেনা, নওয়াজের মৃত্যুভয়ে পলায়ন। লাস্টেরটা সবচেয়ে ইম্পর্ট্যান্ট কারণ নওয়াজের রোলটি এতটাই বচ্চন-প্রভাবিত যে ওই একটা কনফেসিং কান্না ছাড়া সবই স্টাইলে করেছে। কান্নাটাও দিওয়ার-ইন্সপায়ার্ড হতে পারে, কে জানে। সিনেমার প্রভাব নিয়ে অনেক কথা বলার। সবচেয়ে ভালো দেখায় জীশান যখন পুরোনো সাজন টাইমের সালমান খানের চুলের স্টাইল নকল করছে, তখন সিনেমা/স্টাইলের প্রসঙ্গ আনা হয়। কিন্তু তেরে নামের স্টাইলটা যখন যখন ইমপ্লিমেন্ট করা হয়, তখন কিন্তু ট্রান্সফর্মাশনটা খুব সাইলেন্ট। সবাই এই ধরণের প্রসঙ্গে সত্যজিতের পোস্টমাস্টারের কথা বলে, যেখানে অনিল চ্যাটার্জীর স্ট্যাম্প মারার স্পিড বেড়ে যায়। তার আগে বাংলা সিনেমায় দেখাতো ক্যালেন্ডার উড়ে যাচ্ছে। কিন্তু এই তেরে নামের রাবীন্দ্রিক ছাঁট অ্যাডাপ্টেশন আরো অসাধারণ, আরো সফিস্টিকেটেড, আরো সাটল। প্রায় প্রতিটা সিন নিয়ে কিছু লিখতে হয়, কিন্তু সেটা এই শর্মার দায়িত্বও না, আর করতে দিলে হেগে উল্টে দেবে। এখানে পরিচালকের কি ব্যাখ্যা জানি না, কিন্তু আরেক পরিচালক তিগমাংশুকে দিয়ে যখন বলানো হয় ভারতীয় চলচ্চিত্রের প্রতি অপরিসীম ঘৃণার বাক্য, তখন কি কিছুই সন্দেশ (message) নেই?! যতই পীযুষ ডায়াবেটিক সিনেমার কথা বলুন, এখানে একটু কেমন যেন হয়ে গেছে। তবে তার সাথে যখন একই তিগমাংশু দর্শকদের মনে করিয়ে দেন যে কীভাবে তিনি তিন প্রজন্মকে মেরেছেন শত্রুশূন্য জীবনের জন্য, তখন আবার মনে হচ্ছিল, আরে, এই লোকটাই তো আসল হিরো। তো, এইসব ছোটোখাটো ইন্সটান্সে ভরা ছবি। সিনেমা কেমন, এবার সেটা বলার। ন্যারেশনটা না থাকলে জমে যেত। ব্যাপার কী, সিনেমায় কোনো টুইস্ট নেই, নতুন কনসেপ্ট নেই। তাও বসে দেখা যাচ্ছে অনায়াসে। জানা তথ্য যে এবার ক এর হাতে খ খুন হবে, এবার গ ঘ কে বাঁচাবে, এবার ঙ চ এর মৃত্যুর প্রতিশোধ নেবে, ছ এবার জ কে লুটবার প্ল্যান করবে, ঝ ঞ এর বৌকে মারবে। প্রেডিক্টিবিলিটির বাবা। তবুও। স্ক্রিপ্ট-রাইটার/ডায়লগ-রাইটার অনুরাগের রিলোডিং হলো যেন। শেষে একটা কথাই বলার, যাদের নরম মন, তারা যাবেন না। এটা এখন বহু সিনেমাতেই বলে, কিন্তু এটা একদম ঠিক এই সিনেমার ক্ষেত্রে। বাইশে শ্রাবনের মতো খিস্তাচ্ছে তো ডাল-ভাতের মতো, জায়গায় জায়গায় দর্শককে বাধ্য করে গালাগালি দিতে। আমিই কতবার শুওরের বাচ্চা বলেছি ঠিক নেই। আর দুবার খানকির ছেলে। এই দুবার অবশ্য সবার জন্যই। এটা মিস হবে না, লিখে দিচ্ছি।"


__________

[*] পঙ্কজ ত্রিপাঠি আর রাজকুমার রাও। তখনও এদের নাম জানতাম না

[†] ১১ বছর পরে পুরো স্মৃতি মুছে গেছে

0 comments:

Post a Comment